শুক্রবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৫

Android Phone কেনার আগে যা যা জেনে রাখা উচিত

বর্তমানে Android Smart ব্যাপক জনপ্রিয়। সবাই চায় একটা ভালো মানের Android Smart Phone কিনতে।
কিন্তু Android Smart Phone সম্পর্কে সবার ভালো ধারনা নেই, বিশেষ করে নতুন ব্যাবহারকারী যার। যারা নতুন ইউজার বা নতুন ফোন কিনবেন তাদের জন্য এই পোষ্টটি।।
Android SmartPhone (স্মার্টফোন)
প্রকৃত পক্ষে Android ফোনকে ফোন না বলে একটি Mini Computer বলা যেতে পারে। একটি ভাল মানের প্রসেসর অনেক দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করবে। আর Ram যত বেশি হবে, তত বেশি ও বড় Application এবং Games চালাতে পারবেন। GPU হচ্ছে Graphic Processing Unitএর সংক্ষিপ্ত রূপ। GPUএর প্রধান কাজ হচ্ছে মোবাইলের Displayতে যেসব জিনিস আসবে, সেগুলোকে Process করা এবং অন্য আরেকটি Processor, যার কাজ শুধু Graphics Process করা।। যেমন:- ভিডিও, গেমস।
GPU Powerful হলে HD Games ও HD Videos চালানো কোন ব্যাপার নয়।
Android Smart Phone কেনার আগে যেসব বিষয় জেনে রাখা উচিত তা নিন্মে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো
প্রসেসর (Processor)
যেসব কাজগুলো প্রসেসর করতে পারে, তাকে বলা হয় ইন্সট্রাকশন (Instraction) সেট। একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার আগে প্রথমেই দেখতে হবে ইন্সট্রাকশন সেট কোনটি। পুরাতন ফোনের প্রসেসরের থাকে ARMV6 বা ARM11 ইন্সট্রাকশন সেট, যেটা এখনকার যুগের নতুন কোন বড়সড় অ্যাপলিকেশন বা গেম চালাতে পারে না। এখন আর ARMv6 ফোন না কেনাই ভাল। ইন্সট্রাকশনের তথ্য আপনি ফোনের স্পেসিফিকেশন দেখলেই পেয়ে যাবেন। যদি ARMv7 বা এর পরের হয়, প্রসেসরটি উন্নতমানের। এরপর হচ্ছে প্রসেসরের গঠন বা আর্কিটেকচার। কাজ শুধু জানলেই হবেনা, বলিষ্ঠ শক্তিশালী হতে হবে।।
Processor Architecture
ARMv7-এর মধ্যে Architecture (আর্কিটেকচার) মুলত পাঁচ ধরনের।
এগুলো হচ্ছেঃ--> Cortex A5, A7, A8, A9 ও A15..
প্রত্যেকটি কোম্পানিই এই পাঁচ ধরনের Architecture (আর্কিটেকচার) মেনেই Processor তৈরি করা হয়ে থাকে। Cortex A5 মূলত অনেক পুরাতন ও বেশ দুর্বল। অন্যদিকে Cortex A15 সবচেয়ে শক্তিশালী। সম্প্রতি সময়ে বাজারে আসা Android Smart Phone কেনার সময় সম্ভব হলে Cortex A9 দেখে নেয়া উচিত। আর তা না হলে Cortex A7.. তবে Cortex A5 এর স্মার্টফোন না নেয়াই ভাল। কিন্তু যারা ফোনে HD Games খেলে না বা
HD Video দেখে না, তাদের জন্য আবার Cortex A5 দেখে নেওয়াই ভালো। কারন Cortex A5 আর্কিটেকচারের প্রসেসরগুলো খুবই কম Battery Use করে, যার ফলে ফোনে দীর্ঘ ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায়।
**প্রসেসরের আরেকটি ব্যাপারটি হলো NEON সাপোর্ট।
NEON কঠিন কিছু না। NEON Supported হলে আপনার ফোনের প্রসেসর উচ্চ মানের ভিডিও সরাসরি প্লে করতে বা চালাতে পারবে।
>> Clock Speed বা প্রসেসরের কাজের গতি:-->
Clock Speed যত বেশি হবে, ততো ভাল।
>> প্রসেসরের আরেকটি বিষয়, Processor মাল্টিকোর (MultiCore) কিনা? Dual Core মানে দুইটি প্রসেসর, Quad Core মানে ৪টি। প্রসেসর। ঠিক এমনি ভাবে Hexa Core মানে ৬টি প্রসেসর এবং Octa Core মানে ৮টি প্রসেসর। প্রসেসরের Coreই সবকিছু না। প্রসেসর কোন Architecture এর সেটা বড় ব্যাপার। যেমন Dual Core Cortex A9 এর স্কোর যদি হয় 40, Quad Core Cortex A7 এর স্কোর হবে 50.. তবে HD Games খেলার জন্য Quad Core বা তারচেয় বেশি Core দেখে কেনা উচিত। তাই প্রথমে দেখা উচিৎ প্রসেসর ইন্সট্রাকশন সেট ও আর্কিটেকচার।।
Ram (Random Access Memory)
আমাদের মেমোরি কার্ড বা ফোন মেমোরি প্রসেসর যে হারে কাজ করে, সেই হারে ডাটা পরে দিতে পারেনা। তাই
ডাটা আগে Ramএ নেয়া হয়, যা অনেক দ্রুত কাজ করে।
Ram যতো বেশি, ততো বেশি ডাটা দ্রুত প্রসেসরে যেতে পারে। ফলে ফোন অনেক দ্রুত কাজ করে ফেলতে পারে। Ramএরও Speed এবং আর্কিটেকচার (Architecture)
আছে। Ram মুলত তিন ধরনের হয়।
যথাঃ--> DDR-1, DDR-2 ও DDR-3..
DDR-1 Ramএর চেয়ে DDR-2 ভালো ও স্পীড বেশী,
ঠিক একইভাবে DDR-2 এর চেয়ে DDR-3 ভালো এবং স্পীড বেশি।. 512MB Ram যুক্ত ফোন নিতে পারেন তবে 1GB বা তার বেশী হলে ভাল হয়। Ram যত বেশী হবে ফোন ততো দ্রুত কাজ করবে।।
জিপিইউ (GPU: Graphics Processing Unit)
Android Smart Phoneএ GPU একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
নিচে বিভিন্ন শ্রেণীর GPUএর তালিকা দেওয়া হলো।।
>> প্রথম শ্রেণীর GPU:-
Adreno 420, Adreno 330, PowerVR G6430, ARM Mali-T628, PowerVR GSX 544 MP4, ARM Mali-T604, NVIDIA GeForce Tegra 4, PowerVR SGX543 MP4, Adreno 320, PowerVR SGX543 MP2, PowerVR SGX545, PowerVR SGX544
>> দ্বিতীয় শ্রেণীর GPU:-
Adreno 305, Adreno 225, ARM Mali-400 MP4, NVIDIA GeForce ULP (Tegra 3), Broadcom VideoCore IV, Adreno 220, ARM Mali-400 MP2, NVIDIA GeForce ULP (Tegra 2), PowerVR GSX540
>> তৃতীয় শ্রেণীর GPU:-
Adreno 200, Andreno 205, Andreno 203, Mali 400, Tegra, PowerVR 531 Etc...
এখানে শ্রেণী মানেই সবকিছু না। প্রায় সব ধরনের গেমই তৃতীয় শ্রেণীর GPUতেও চলে। তবে যতো ভালো GPU হবে, তত ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। তাই যতদূর
বাজেটে সম্ভব নতুন GPU দেখে ফোন কেনা উচিৎ।
>> GPUএর সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয় হচ্ছে Screen Resolution.. Resolution বেশি হলে বেশি Pixel অর্থাৎ বেশি ডাটা GPUকে Process করতে হয়। তাই
ফোনে রেজুলেশন বেশি হলে, শক্তিশালী GPU থাকতেই
হবে, নাহলে ফোন অনেক Slow কাজ করবে। আর আরেকটি বিষয় হচ্ছে HD Video, তালিকায় সব GPUই HD Video চালাতে সক্ষম। তবে 1080P HD Videoএর জন্যে অন্তত দ্বিতীয় শ্রেণীর GPU থাকতে হবে। 720P HD Video সবগুলোই GPU চালাতে পারবে।
ডিসপ্লে (Display)
Display একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন Technology এর Display আপনি চান তা পছন্দ করা। Market এ বর্তমানে Amoled, Retina, IPS,LCD ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ডিসপ্লে সম্পন্ন Mobile পাওয়া যায়। এগুলোর Picture Quality/ Brightness/Angling View/Clearness/ Sharpness ইত্যাদি ব্যাপারগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
Screen Size
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে Screen Size। আপনি যদি বড় স্ক্রিন পছন্দ করেন তাহলে 5"-5.5" , আর ছোট পছন্দ করলে 4"-4.5" দেখে কেনা ভালো।
PPI(Pixels Per Inch)
PPI যদি কম হয় , তবে ফোনে ভাল মানের Graphics পাবার আশা করা যায় না। তবে PPI যত বেশি, ফোনের দামও ততো বেশি! PPI-250 নিচে না কেনাই ভালো। ফোনের Resolution যতো বেশী হবে, PPI ও ততো বেশী হবে।
Touch
বর্তমানে Capacitive আর Resistive দুই ধরনের টাচ
টেকনোলজি বাজারে আছে। ভুল করেও Resistive Touchএর ফোন কিনবেন না! কারন Resistive Touch অনেক ঝামেলার।
Protection
ভালো মানের Protection থাকলে Screen এ Scratch বা দাগ পড়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। Protection এর মধ্যে রয়েছে Corning Gorilla Glass 1st,2nd, 3rd Generation ইত্যাদি।
ক্যামেরা (Camera)
অনেকে মনে করেন যে, ফোনে HD Video Recording শুধু ক্যামেরার সেন্সরের উপর নির্ভর করে। কিন্তু মোবাইলের 720P এবং 1080P ভিডিও রেকর্ডিং আসলে ভালো GPU এবং CPUএর উপর নির্ভর করে। ক্যামেরার সেন্সর শুধু ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করে। পরবর্তী পর্যায়ে কিন্তু সেটি চলে যায় সিপিইউ এবং জিপিইউ কাছে প্রকিয়াকরণ (Rendering) এর জন্য।।
মেমোরি (Memory)
ফোনে যদি SD Card Slot না থাকে, তবে Internal Mass Storage Minimum 16/32GB আছে কিনা দেখে নিন। আর SD CardSlot থাকলে তো আরো ভালো। SD Card আলাদা কিনলে, অবশ্যই Class 10 দেখে কিনুন।।
সর্বপরি
কম্পিউটারের কনফিগারেশনের মতোই স্মার্টফোন কেনার সময়ও আপনাকে পুরো কনফিগারেশনকেই বিচারে রাখতে হবে। উপরের বিষয় গুলোর সাথে সাথে অন্য সব Features (যেমন:- 3G, Battery Backup, HTML-5, Flash Player Supported কিনা, GPS ইত্যাদি) মিলিয়ে বাজেটের ভিতর সবচেয়ে সেরা ফোনটি বেছে নিন। Specifications দেখে আপনি কেবল প্রাথমিকভাবে আপনার পছন্দের ফোনটি Select করবেন। ফোনে আসলেই পারফরম্যান্স কেমন, বিল্ড কোয়ালিটি, ডিসপ্লে কোয়ালিটি ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনাকে সেট হাতে নিয়ে দেখতে হবে। তাই নিজে নেড়েচেড়ে না দেখে কেবল স্পেসিফিকেশনের উপর ভিত্তি করে কখনো ফোন না কেনাই ভালো।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন